যাত্রা 🔐🔐
ছিল না কোন দাবি, না আছে এখন! শুধু বাস্তবতার দোহাই দিয়ে এক নদীতেবাধ নির্মাণ করে শ্রেষ্টত্বের প্রতীক হওয়া অন্যের চোখে দামি হলেও ভেতরটাআমার পুড়ছে।
ঘড়ি কাটা টিক টিক টিক টিক করে নিজ অ্যালগোরিদম মেনে চলছে। সাথে জীবন থেকে
কিছু মূহুর্ত হারিয়ে যাচ্ছে। সাহস হচ্ছে না পথটা পেরিয়ে ওপারে হাঁটি। একসময় হয়তো
এক পলক স্বস্তির জন্য সহস্র মাইল পেরিয়ে পায়ে ফোসকাবার তোয়াক্কা করি নি। তবে
এখন কেন এ ভয়?
অঝর বর্ষায় যখন রাস্তায় উপর নিয়ন বাতি গুলো জ্বলে থাকে আর দৃষ্টি বহু দুরে পড়ে,
মনে হয় অজানা ডাক আমায় ডাকছে। কিছু দুর এগোতেই সব মিলিয়ে যায় এক ধোয়াশায়।
আমি এখনও এর রহস্য ভেদ করতে পারি নি।
দেখতে দেখতে শীত উঁকি দিল। হাফ হাতা গেন্জিতে শীতটা বেশ টের পাওয়া যাচ্ছে। এখন
সিগারেট ছাড়াও মুখ দিয়ে ধোঁয়া উড়ানো যাচ্ছে।
দূরে মনে হচ্ছে একটা নদী দেখা যাচ্ছে আর পাশে একটা টোং। গিয়ে দোকানে বসে
কাকাকে বললাম
এককাপ শিশির দিয়ে চা দাও তো।
কয় চামচ চিনি খাবা?
একটু বেশি দিও তবে চিনি মিশিয়ে দিবা না।
তুমি তো মিয়া বড্ড আজব।
সবাই বলে এমন। যা হোক সিগারেট আছে?
আছে। কি দেবো?
সব থেকে সস্তা কি আছে?
গোল্ড লিফ ছাড়া আর সস্তা কিছু নেই।
আচ্ছা তা অর্ধেক সিগারেট নিলে দাম কম রাখা যাবে না?
আজব কিসিমের লোক তো তুমি মিয়া। এ নেও এটা আমার থেকে তোমার জন্য ফ্রি।আর চা
নাও এটার দামও দেয়া লাগবে না।
আমি দোকানদারের দিকে তাকিয়ে কিছু না ভেবে চা সিগারেট নিয়ে নদীর পাড়ে বসে
সিগারেটটা জালিয়ে কিছুক্ষণপর চায়ে চুমুক দিচ্ছি।
আশপাশে তেমন লোকজন নেই। বেশ শান্ত চারপাশ।চায়ে এক চুমুক দিতেই মনটা কেমন
শীতল অনুভব করছি। পরক্ষনেই সিগারেটের টান ভেতটা জ্বালিয়ে দিচ্ছে।ভেতরের যত
আবেগানুভুতি গুলো নিকোটিনের সাথে মিশ্রিত হয়ে বাতাসে উড়ে যাচ্ছে। ভাবছিলাম এটা যদি
প্রিয়তামর নাককে স্পর্শ করে তাহলে হয়তো সে আমার উপস্থিতি অনুভব করতে পারবে।
তবে এ অপেক্ষা আর কত??
নদির দিকে তাকিয়ে ছিলাম বেশ কিছু সময়। ছোটবেলায় জলপরীর কাহিনির কথা মনে পড়ে
গেল। মনে মনে ভাবছি যদি একটা জলপরীর দেখা পেতাম মন্দ হতো না।তবে রুপকথা তো
সত্য হবে এটা সত্য ভাবা নিতান্তই বিলাসীতা। চা শেষ আর সিগারেটটাও। এখন বসে থাকা
মুল্যহীন। তাই উঠে হাটা শুরু করলাম।দেখি দুচোখ আর পা দুখান কোথায় নিয়ে যায়।
কাউকে বলার মত কিছু নেই। কিছু ভেবে নিজেকে ভাবাবো কিছুর জন্য, সেটারও শুণ্যতা
অনুভব করছি। সব কিছু এখন শুণ্যতা।আর আমি শুণ্যতায় ভেসে হাহা কার দেখি।
মনে পড়ে গেল সেদিনের কথা।ওইযে মাঝ রাতের দিকে ৬ তালার বারান্দায় দাড়িয়ে রোডের
নিয়নের বাতির দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা। ভয় তো মুলতো তখন থেকেই প্রসব
করেছে। ভয়টাকে আরএকটু বাড়াতে বৃষ্টির কোন তুলনা নেই।বলতে বলতেই বৃষ্টির আগমন।
বৃষ্টি কেবল মাত্র মনে বিরহের ছোয়া দিতেই সেও উধাও।খুব অসহ্য একটা অনুভুতি।যা হোক-
মধ্যরাতে ঘনকুয়াশা নিয়ন বাতির আলো ঝাপসা করে দেয়।আর প্রতি সিগারেটের চুম্বন
ভেতরটা ধ্বংস লীলায় মাতিয়ে তুলছে।প্রতি পলকেই মনে হয় সংলাপগুলোর অস্বাভাবিক
মৃত্যুর ভয় প্রসব করছে।
তবে কি তা ভয় হয়ে থাকবে?
ঠিক বলা যাচ্ছে। কি হতে পারে। যা-ই হবে আশা করি সুখকর হবে না। কারণ এখনও
কোন কিছু জীবনে ঠিক মতো হয়ে ওঠে নি।আর হবে এটারও সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।
হঠাৎ দুচোখ মিলন নেশায় মত্ত হয়ে মিলে গেল। চোখ বন্ধ হতেই সব কিছু অন্ধকার। আর
এ অন্ধকার তুমি ছাড়া আমার জীবনের মতো। তাহলে বলায় যায় তা সব সময় অন্ধকারেই
ডুবে যাবে।
সকালে এসে কে যেন ডাকছে। এই ওঠো। চোখ খুলে এক নারি দাড়িয়ে, ভেজা চুল আর
হাতে এক কাপ চা। দেখে বেশ ভাল লাগল। হাত থেকে চা খানা নিতে সে তার ভেজা চুলের
ঝাপটা, আমার শরীর ছুয়ে গেল।বেশ ফুরফুরা লাগছে। চায়ের কাপ পাশে রেখে তার হাত
টেনে যখন তার শিক্তঠোটে ডুবতে যাবো, ঠিক তখনি আমার এক আংগুল চায়ের কাপে
ডুবাতেই চোখ খুলে গেল। চোখ খুলে দেখি বাইরে রোদ। বিষয়টা কি হলো? ওহ আচ্ছা
তাহলে এটা স্বপ্ন ছিল।
কোন রকম উঠে চোখ মুছে নিলাম। আজ হঠাৎ হিমু হতে মন চাচ্ছে।তাই পাশে থাকা
পানজাবিটা পরে নগ্ন পায়ে বেরিয়ে পড়লাম। সদর ফটক দিয়ে বের হয়ে দেখি রোদটার তেজ
অনেক বেশি। আজ আমি হিমু। তাই রোদটা একটু সহ্য করতে হবে। যা হোক হাটছি।
পায়ের নিচে মনে হচ্ছে লাভার চাদরের উপর হাটছি। মনে হচ্ছে পায়ে ফোসকা পড়া শুরু
হয়ছে।এসবের তোয়াক্কা করা যাবে না। কারণ আজ আমি হিমু। এজন্যই আজ আমার রোদ
আর লাভা চাদরে মোড়ানো রাস্তা খুব ভাল লাগতেছে। এদিকে পেটে একটু টান ধরছে। মনে
হচ্ছে খুধা লাগছে। তবে পানজাবির পকেট নেই। এখন কোন দোকানে গিয়ে একটু ভাব
জমাতে হবে। যদি ভাবের জন্য কিছু খেতে দেয়। পাশেই দেখি একটা হোটেল। যাহোক প্লান
মাফিক গেলাম দোকানে। ক্যাশে বসা দোকানির কাছে গিয়ে-
মামা কেমন আছো?
আছি মামা।তোমারে তো চিনলাম না।
আমি আর কে হবো। দেখে মানুষ ছাড়া তো কিছু মনে হচ্ছে নাকি?
না না মামা। দেখে তো মানুষই মনে হচ্ছে।
তা মামা দোকান কত দিন ধরে দিছো?
এই ১০-১২ বছরের মতো।
যাক তা তো ভাল। বেচা কেনা কেমন হয়?
আল্লাহ ভালোই দেয়। তা মামা এতো কিছু কেন জিজ্ঞাসা করছো? নিউজ রিপোর্টার নাকি
তুমি?
আরে না মামা। আমারে দেখে এত বিলাসী চাকরিজীবী মনে হয়? এসব জব করবে যাদের
মনের ভেতর এক গোয়েন্দা গোয়েন্দা ভাব থাকবে,আবার একটু উচ্চভিলাসী, যাদের বুকে
সাহস ভরা তারা করবে এসব চাকরী।আমার না আছে উচ্চাভিলসী মন মানসিকতা না আছে
বুকে সাহস। চাকরিবাকরি আমার জন্য না।
ওহ মামা তাও ঠিক বলছ। তোমাকে দেখে অনেক নিরীহ মনে হচ্ছে। তা তুমি খাবা নাকি?
তুমি যেহেতু বলছ না বলি কি করে। আচ্ছা তোমার দোকানের সব থেকে সুস্বাদু খাবার দেও।
এ ১ নাম্বার টেবিলে গরুর বিরিয়ানি দেতো।
মামা সাথে কিন্তু দুটো কাটা মরিচ আর ১ টা পেয়াজ দিও।
কেন মামা?
ঝাল এমন এক জিনিস যা সব খাবারের সাথে যায়।আর খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে দেয়।
এ কই,১ নাম্বার টেবিলে দুটো মরিচ আর পেয়াজ দে।
খেয়ে দেয়ে মামাকে ধন্যবাদ সূচক মাথা নাড়িয়ে বের হয়ে পড়লাম দোকান থেকে।
| Want to reach but I can't. |
কল্পনায় হারিয়ে গেছি কিছুক্ষণের জন্য❣️কিপ গোইং ব্রো
ReplyDeletethank you vai.
DeleteSundor hoyeche...story ta onk valo legeche..emn aro story r jnno wait korchi��
ReplyDelete