Header Ads

Header ADS

আড়ালে আমি , কোথায় নিলু 🔐🔐

কিছু খুশি নিতান্তই সাময়িক , যার অনুভূতি সারা জীবন থেকে যায়। আর আমি দেখেছি কাব্যের কল্পনার ক্যানভাস সব ক্যানভাস হয়েই কাব্য হারিয়ে যায়। এ জন্যই হয়তো 

হারিয়ে যাবার পর আবার ফিরে আসা। 



মানুষ প্রতিটা সময় কিছু না কিছু খুঁজে ফেরে । তবে তার খোজা কখনো পায় দিশার দেখা আবার

কখনোবা দিগন্তে হারায় । মানুষের জীবনে সবথেকে বড় দুর্বলতা হারানোর ভয় । হারানোর অনুভূতি

আর হারানোর ভয় দুটোই অনেক ভয়ংকর। মনের গভীর থেকে কিছু করার উদ্বেগটা থাকলেও , নিয়তি

বেশিরভাগ সময় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। যেমন হয়েছিল সেদিন । 




উত্তপ্ত রাস্তা দিয়ে আমি দৌড়ে চলে ছিলাম তোমার দিকে ।  আর তোমার গাড়ি চলেছিল  তোমার

ভবিষ্যৎ গন্তব্যে । রাস্তার মোড় বাঁদিকে বাঁক  নিতেই অপর দিক থেকে আসা গাড়ি আমার সাথে সংঘর্ষে

লিপ্ত হয় । 


এরপর সেদিন কি হয়েছিল কেউ জানেনা । আশেপাশের গুটি কয়েক লোকজন ছাড়া। 


এক ধাক্কায় ছিটকে গিয়ে পড়ি বেশ দূরে । শরীরের বেশির ভাগ অংশ আঘাত প্রাপ্ত । শরীর থেকে বেরিয়ে

আসা রক্ত রাস্তাকে সঞ্জিত করছে। প্রচুর রক্ত ক্ষরণের জন্য আমার চোখ প্রহরগুনে যাচ্ছে আর দুর্বল

প্রায় হৃদয়টা ভয়ে স্পন্দিত হচ্ছে । যদি স্পন্দন থেমে যায় , তবে তুমি আর আমি মিলে আমাতে হওয়ার

সময় সাপেক্ষ হয়েই রয়ে যাবে । দু-চোখের পাপড়ি মিলনের নেশায় মেতে আছে । তবুও এক দৃষ্টিতে

তাকিয়ে থাকলাম । হলোনা ভাব বিনিময় । শুধু বাতাসে হারাবার গন্ধটাই ভেসে আসলো। আর আমি সেই

গন্ধটা অনুভব করতেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলি । এরপর নিজেকে এক হাসপাতালে বারান্দায় আবিষ্কার

করলাম ।মাথায় মোটা করে  গজ কাপড় পেঁচানো আর সারা শরীরে  জায়গায় জায়গায় টুকরো টুকরো

ব্যান্ডেজ পেঁচানো। সমস্ত শরীর ব্যথায় জর্জরিত।আমার অবস্থা এতটাই খারাপ যে আমি কোন কথাই

বলতে পারছিনা ।দুচোখ খুলা মাত্রই আমার অবচেতন মন বার বার নিলু নাম জপ করছে। যদি একবার

চোখের সামনে দেখতে পেতাম । যা হোক বেশ কিছুদিন পর , আনুমানিক মাস ৩ । তখন একটু

স্বাভাবিক হলাম , কোনরকম হাঁটাচলা করতে পারছি । হাসপাতাল থেকে আমাকে ডিসচার্জ করে দেওয়া

হল।  কাছে একটি টাকাও নাই আর শরীরের ব্যথাটাও এখনো পুরোপুরি সেরে উঠেনি। কোথায় যাব ?

জানিনা ।  পথ ঘাট সবকিছুই অচেনা। সাথে অচেনা শহরের লোকজন । এমনকি শহরের বাতাসটাও ।

এসব কিছু আমাকে নতুন করে ভাবিয়ে তুলছে। 



কোন উপায় না পেয়ে পাশেই রেলস্টেশনে আশ্রয় নিলাম। ওইখানকার স্টেশন মাস্টার আমাকে দেখে

জিজ্ঞাসা করল।  



কে তুমি ? আগে তো কখনো দেখিনি। 

তাকে সহজ ভাষায় জানালাম,  আমি এক আগন্তুক । এসেছি নিলুকে খুঁজতে। 

 কে এই "নিলু" ?

 উত্তরে আমি এক ভাবে দূরের এক ঝাক পাখির দিকে তাকিয়ে । 

 কি হল ছেলে ? হঠাৎ এমন গম্ভির হয়ে গেলে যে।

কাকা তেমন কিছু না। শরীরটা প্রচুর দুর্বল। একটু বিশ্রামের দরকার । কাছে টাকা পয়সা কিছুই

নেই। বেশ ক্ষুধাও পেয়েছে। 

 আচ্ছা । অবশ্য আমার এখানে কেউ থাকে না। আমার রুমে তুমি থেকো। আর সুস্থ  হওয়ার আগ পর্যন্ত

আমার এখানে থাকতে পারো। 

চোখে ছলছলিয়ে পানি চলে এল। আমি ধন্যবাদ সূচক বাক্যে তাকে কৃতজ্ঞতা জানালাম ।

 ঘরে ঢুকতে স্টেশন মাস্টার বলে ঘরে চারটে ভাত আর সবজি আছে খেয়ে বিশ্রাম নাও।

 এতটাই ক্ষুধার্ত ছিলাম যে হাত না ধুয়েই খেতে  বসি। খাওয়া দাওয়া শেষ করে বিশ্রাম করতে যায়।




রাত প্রায় ২ টার মত বাজে । চোখে ঘুম নেই। বাইরে বেশ বাতাস ছেড়েছে। মনে হয় কিছুক্ষণের মধ্যেই

ঝড় উঠবে। ওই দিন বেশ গরম ও পড়েছে রাতের দিকে। আমি বালিশ ছেড়ে বারান্দায় গিয়ে আরাম

কেদারায় বসলাম ।স্টেশন মাস্টারকে না বলেই তার পকেট থেকে সিগারেট বের করে নিয়েছিলাম। ৬

তালার উপর থেকে মনে হচ্ছে শহরটা সম্পূর্ণ দেখা যাচ্ছে। সিগারেটে এক একটি টান যেন শরীরের এক

একটি নার্ভকে ওই মুহূর্তে সচল করে দিচ্ছে। তবে পরক্ষনেই মনটা কেমন যেন বিদ্রূপ আচরণ করা শুরু

করল।বেশ অসস্থি লাগছে।তবুও খারাপ লাগলেও কিবা করার আছে। খারাপ হোক বা হোক ভালো 

,সবকিছুই এখন নিকোটিনে পুড়ে বাতাসে মিশ্রিত হচ্ছে ।যা হয়তো একসময় গিয়ে প্রিয়তমার নাক স্পর্শ

করবে। তবে আর কত নিকোটিনে নিজের বার্তা প্রিয়তমার উদ্দেশ্যে বাতাসে উড়িয়ে দেব।কবে

প্রিয়তমার নাক আমার বার্তা অনুভব করবে? এ ফুসফুস যে আর পেরে উঠছে না।একটু দূরে তাকাতেই

দেখি নিয়নের বাতিটা পিটপিট করে জ্বলছে ।দেখে বেশ ভয় হচ্ছে । মনে হচ্ছে যেন আমার শেষ

সময়কে ইঙ্গিত করছে । তবে এখনি হার মেনে নিলে তো চলবে না । এদিকে শরীরটাও খারাপ। চেষ্টা

করার পরেও ঘুম আসছে না। নিলু তোমাকে পাওয়া হবে না । তাই হয়তো রাত আমাকে নিজের করে

নিতে পারছে না । 



এক দুপুরে পরিচয়, এক বিকেলে ভালোবাসা।

এক শ্রাবণে বিচ্ছেদ আর এক বসন্তে হারিয়ে ফেলা।                                          (56 🔐)




                                                                            

6 comments:

Theme images by cstar55. Powered by Blogger.